এসএসসির পর সেরা বিষয় কোনটি ?-বিজ্ঞান, কমার্স নাকি মানবিক।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবএসএসসির পর সেরা বিষয় কোনটি ? এই বিষয়টি নিয়ে হয়তো আমরা অনেকেই বিভ্রান্তির মধ্যে থাকি। তবে আমাদের অবশ্যই আগে থেকেই জেনে নেওয়া উচিত এসএসসি পাস করার পর কোন বিষয়ে পড়লে ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার করা যায়?

পোস্ট সূচীপত্রঃএসএসসির পর সেরা বিষয় কোনটি ?-বিজ্ঞান, কমার্স নাকি মানবিক।
- এসএসসির পর সেরা বিষয় কোনটি, ভবিষ্যৎ গড়ার দিকনির্দেশনা
- নিজের আগ্রহ দক্ষতা যাচাই করুন
- বিজ্ঞান বিভাগঃভবিষ্যতের টেকনোলজির চাবিকাঠি
- ব্যবসা বিভাগঃ উদ্যোক্তা ও কর্পোরেট দুনিয়ার চাবিকাঠি
- মানবিক বিভাগঃ সমাজ, সংস্কৃতি ও মানবিক চেতনার জগত
- ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষাঃ চাকরির নিশ্চিত পথ
- অনলাইন ভিত্তি স্কিল শেখাঃ ভবিষ্যতের সেরা সম্পদ
- ভবিষ্যতের চাকরি বাজার ও ট্রেন্ড অনুসন্ধান করুন
- পরিবার ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন
- লেখকের শেষ কথা
এসএসসির পর সেরা বিষয়ে কোনটি, ভবিষ্যৎ গড়ার দিকনির্দেশনা
এসএসসি শেষ করা মানেই জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় পার করা। এর পরের সিদ্ধান্তগুলোই একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। তাই সঠিক বিষয় নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরী। এক্ষেত্রে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান-এসএসসির পর সেরা বিষয় কোনটি ? বিজ্ঞান, ব্যবসা নাকি মানবিক। মূলত এই কারণেই আজকের এই আর্টিকেল আমরা বাস্তবমুখী দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করে দেখব, কোন বিষয় পড়লে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
নিজের আগ্রহ দক্ষতা যাচাই করুন
এসএসসির পর কোন বিষয়ে পড়া উচিত, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিজের আগ্রহ ও দক্ষতা যাচাই করা। অনেকেই অন্যকে দেখে বা পরিবার আত্মীয়র কথায় বিভাগ বেছে নেয়, কিন্তু এটা দীর্ঘ মেয়াদে ভুল সিদ্ধান্তে পরিণত হতে পারে। তাই আপনি কোন বিষয়ে পড়লে আনন্দ পান, কোন সাবজেক্ট আপনার কাছে ভালো লাগে বা আপনি ভবিষ্যতে কোন পেশায় যেতে চান। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজে নিজে খুঁজে বের করাই আপনার প্রথম কাজ।
যেমন আপনি যদি অঙ্কে দুর্বল হয়ে থাকেন, তাহলে বিজ্ঞান বিভাগে পড়া কষ্টকর হয়ে যেতে পারে। আবার যদি ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা ভালো বুঝে থাকেন, তাহলে কমার্স আপনার জন্য হতে পারে, সেরা পথ। তাই নিজের ইচ্ছা, আগ্রহ ও দক্ষতা মিলিয়ে নিজেকে ঠিক করতে হবে কোনটি পড়লে আপনি সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারবেন। মূলত এর কারণ হলো আগ্রহ থাকলে পড়ালেখা কখনো চাপ মনে হয় না বরং সেটা হয়ে যায় আনন্দময় এক যাত্রা।
বিজ্ঞান বিভাগঃভবিষ্যতের টেকনোলজির চাবিকাঠি
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পৃথিবী প্রযুক্তির উপর নির্ভর, আর এই প্রযুক্তির মূল চালকাসক্তি হল বিজ্ঞান। রোবটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, মহাকাশ গবেষণা-সবকিছুতেই বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে, তারা ভবিষ্যতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, ডেটা সায়েন্টিস্ট কিংবা সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করব
এছাড়াও শুধু ভালো চাকরি নয়, বিজ্ঞান বিভাগ শিক্ষার্থীদের কে উদ্ভাবক ও সমস্যার সমাধানকারী করে গড়ে তোলে। তাই আপনারা যারা প্রযুক্তি ভালবাসেন, নতুন কিছু জানতে আবিষ্কার করতে আগ্রহী। তাদের জন্য বিজ্ঞান বিভাগ হতে পারে ভবিষ্যতের সাফল্যের উল্লেখযোগ্য চাবিকাঠি।
ব্যবসা বিভাগঃ উদ্যোক্তা ও কর্পোরেট দুনিয়ার চাবিকাঠি
যারা ভবিষ্যতে ব্যবসা করতে চান, কর্পোরেট অফিসে কাজ করতে চান কিংবা অর্থনীতি বাণিজ্য নিয়ে ভাবতে ভালোবাসেন। তাদের জন্য ব্যবসা বিভাগ একেবারে পারফেক্ট পছন্দ হতে পারে। কারণ এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, ব্যাংকিং ব্যবসায় উদ্যোগ ইত্যাদি বিষয়ে পড়াশোনা করে, যা সরাসরি বাস্তব জীবনে ব্যবহৃত হয়।
.webp)
মানবিক বিভাগঃ সমাজ, সংস্কৃতি ও মানবিক চেতনার জগত
যারা সমাজ, সাহিত্য, ইতিহাস, রাজনীতি, মনোবিজ্ঞান কিংবা দর্শনের মত বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে ভালোবাসেন। তাদের জন্য মানবিক বিভাগ সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। এই বিভাগ কেবলপত্র নয়, বরং মানবজাতির আবেগ, চিন্তা, সংস্কৃতি ও সভ্যতা বোঝার দরজা খুলে দেয়। একজন সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক, প্রশাসক বা গবেষক হতে চাইলে মানবিক বিভাগ আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহযোগিতা করবে।
আরো পড়ুনঃঅ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার উপায়
মানবিক বিভাগের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো মানুষের ভেতরের চেতনা ও চিন্তাকে গভীরভাবে বুঝে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। এই বিভাগ থেকে পড়ে আপনি যেমন বিসিএস, ব্যাংক, আইন, শিক্ষা ক্ষেত্রে কিংবা এনজিও সেক্টরে কাজ করতে পারবেন। ঠিক তেমনি সাহিত্য, ইতিহাস, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদিতেও উচ্চতর গবেষণার সুযোগ পাবেন। তাই আপনার যদি পড়তে, বিশ্লেষণ করতে এবং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে, তাহলে মানবিক বিভাগ আপনার জন্য হতে পারে চমৎকার ও সম্মানজনক পথ।
ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষাঃ চাকরির নিশ্চিত পথ
আজকের বাস্তবতায় শুধু ডিগ্রি থাকলে চাকরি মিলে না-চাই দক্ষতা ও কাজ জানার যোগ্যতা। আরে ঠিক এখানেই ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষা একেবারে প্র্যাকটিক্যাল ও সময়োপযোগী একটি পথ। এই শিক্ষা ব্যবস্থায় এমনভাবে তৈরি, যেখানে আপনি নির্দিষ্ট কোন কাজ বা টেকনিক্যাল শেখা, যেমন ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল, গার্মেন্টস, রেফ্রিজারেশন, সিভিল টেকনোলজি ইত্যাদি বিষয়ে কাজ শিখতে পারবেন।
এই শিক্ষা শেষ করার পর আপনার হাতে থাকবে এক বা একাধিক বাস্তবমুখী স্কিল, যা নিয়ে আপনি সরাসরি চাকরি করতে, ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে এমনকি নিজের একটি ছোট ব্যবসা দার করাতে পারবেন। বর্তমানে সরকারিভাবে এই শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের স্কলারশিপ, প্রশিক্ষণ এবং বিদেশে কাজের সুযোগ থাকে। তাই আপনার যদি পড়াশোনার চেয়ে হাতে কলমে কাজ করতে ভালো লাগে, তাহলে আপনার জন্য ভোকেশনাল বা কারিগরি শিক্ষা হতে পারে সাফল্য অর্জনের একটি স্মার্ট উপায়।
অনলাইন ভিত্তি স্কিল শেখাঃ ভবিষ্যতের সেরা সম্পদ
বর্তমান যুগে ইন্টারনেট কেবলমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের এক বিশাল ভান্ডার। আগে দক্ষতা শেখার জন্য কোথাও ভর্তি হতে হত, কোচিং করতে হতো, কিন্তু এখন ঘরে বসেই ইউটিউব, কুরষেরা, উডেমি, স্কিল শেয়ার, লিংকড ইন লার্নিং বা গুগল ক্যারিয়ার সার্টিফিকেট এর মধ্যে প্লাটফর্ম থেকে শেখা যায় চাহিদা সম্পন্ন স্কিল।
.webp)
ভবিষ্যতের চাকরি বাজার ও ট্রেন্ড অনুসন্ধান করুন
চাকরির ধরন দিন দিন বদলে যাচ্ছে, প্রযুক্তি উন্নয়নে অনেক পুরনো পেশা হারিয়ে যাচ্ছে, আবার নতুন নতুন স্কিল ভিত্তিক চাকরির চাহিদা ও দিন দিন বাড়ছে। তাই এসএসসি পরীক্ষার পর ভবিষ্যতের চাহিদা অনুযায়ী কোন স্কিল বা বিষয় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, তা আগে থেকেই আপনার জন্য জেনে রাখা জরুরী। এতে করে আপনার ভবিষ্যত ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা অনেকটাই বাস্তবভিত্তিক, সহজ এবং সঠিক সাফল্য অর্জন করতে সহায়তা করবে।
পরিবার ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন
এসএসসি পরীক্ষার পর যখন ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিতে হয়,তখন অনেকেই কনফিউস থাকে-কোন বিভাগে যাব? কোনটা ভালো হবে? তাই এই সময়ে একা সিদ্ধান্ত না নিয়ে পরিবারের সদস্যদের ও অভিজ্ঞদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা বড় ভাই বা শিক্ষক অথবা কোন আত্মীয় জিনিষ আগে থেকেই পথে এগিয়ে গেছেন-তাদের অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা এবং পরামর্শ আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে স্পষ্ট করতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায়
এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার আগ্রহের সঙ্গে বাস্তব জীবনের চাহিদা ও পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখার জন্য অভিজ্ঞদের দিক নির্দেশনা গ্রহণ করেন, তাহলে এটি আপনার ভবিষ্যতের গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। অনেক সময় কিছু বিষয় আছে যেগুলো আপনি বুঝতে পারবেন না, কিন্তু অভিজ্ঞরা ঠিকই সেটা আগে থেকে দেখে ফেলতে পারবেন। তাই নিজের আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের উপদেশ গ্রহণ করাও আপনার জন্য একটি বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ, আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এসএসসির পর সেরা বিষয়ে কোনটি বা আপনার জন্য কোনটি ভাল হবে এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন। আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে প্রতিনিয়ত এ ধরনের বিভিন্ন তথ্য পাবলিশ করে থাকি, যদি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিবেন। আর যদি এ বিষয়ে কোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আর এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যমুনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url